Wellcome to National Portal
জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ২৯ জানুয়ারি ২০১৮

রাশেদ খান মেনন

Rashed Khan Menon MP 2

 

 

জন্ম : ১৮ মে, ১৯৪৩, পিতার কর্মস্থল ফরিদপুরে।

পিতা : মরহুম স্পীকার বিচারপতি আব্দুল জববার খান।

মাতা : মরহুমা সালেহা খাতুন।

পিতৃভূমি : গ্রামঃ বাহেরচর-ক্ষুদ্রকাঠি, উপজেলাঃ বাবুগঞ্জ, বরিশাল।

শিক্ষা : বিএ (অনার্স), এমএ (অর্থনীতি), এসএম হল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

গবেষণা : খাদ্য নিরাপত্তা, বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি ব্যবস্থা, ভূমি আইনের সংস্কারসহ বিভিন্ন অর্থনৈতিক ইস্যুতে গবেষণা কাজ ও জাতীয় দৈনিক ও সাপ্তাহিকে নিয়মিত কলাম লেখা ও প্রবন্ধ-নিবন্ধ রচনা।

 

পরিবার-পরিজন

সুপ্রসিদ্ধ পারিবারিক ঐতিহ্যের অধিকারী রাশেদ খান মেনন-এর ভাইদের মধ্যে রয়েছেন স্বনামধন্য কলামিষ্ট সাদেক খান; সাবেক মন্ত্রী, সচিব ও রাষ্ট্রদূত কিংবদন্তীর কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ; সাবেক মন্ত্রী প্রখ্যাত সাংবাদিক এনায়েতুল্লাহ খান; সাবেক সংস্কৃতিক প্রতিমন্ত্রী বেগম সেলিমা রহমান; মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক শহীদুল্লাহ খান ও প্রবাসী স্থপতি সুলতান মাহমুদ খান (আমেরিকা); প্রসিদ্ধ ফটোগ্রাফার এলেন খান (অস্ট্রেলিয়া) ও ইসলামি চিন্তাবিদ আমানুল্লাহ খান (অস্ট্রেলিয়া)। স্ত্রী লুৎফুন নেসা খান অবসর প্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তা। কন্যা ড. সুবর্ণা খান ক্যান্সার সেলের ওপর পিএইচডি করে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত। পুত্র আনিক রাশেদ খান, ইউনিভাসির্টি অব লন্ডন থেকে আইনে অধ্যায়ন করেছেন।

 

ঐতিহ্যবাহী ছাত্র আন্দোলন ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান

ষাটের দশকের তুখোর ছাত্রনেতা রাশেদ খান মেনন বাষট্টির আয়ুববিরোধী সামরিক শাসন ও শিক্ষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে আসেন। ১৯৬৩-৬৪ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)-এর সহ-সভাপতি (ভিপি) ও ’৬৪-৬৭ সালে পূর্বপাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন। বাষট্টি সালে নিরাপত্তা আইনে প্রথম কারাবন্দী হওয়ার পর ’৬৯ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময় ও বিভিন্ন মেয়াদে নিরাপত্তা আইন, দেশরক্ষা আইন ও বিভিন্ন মামলায় কারাবরণ করেন। ’৬৪-এর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা প্রতিরোধে ছাত্র সমাজের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে কুখ্যাত মোনেম খানের আগমনকে বিরোধীতা করতে গিয়ে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত হন ও পরে সুপ্রীম কোর্টের রায়ে ঐ বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার হলে জেল থেকে এম.এ পরীক্ষা দেন। ’৬৭-৬৯ জেলে থাকাকালীন অবস্থায় তিনি বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যে আসেন এবং আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় তিনি ক্যান্টনমেন্টে নীত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত জেলের বাইরে তার যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে কাজ করেন।

 

ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের পর জেল থেকে ছাড়া পেয়ে তিনি মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বাধীন কৃষক সমিতিতে যোগ দেন ও সন্তোষে ঐতিহাসিক কৃষক সম্মেলনের সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭০-এর বাইশে ফেব্রুয়ারি পল্টন ময়দানের জনসভায় ‘স্বাধীন জনগণতান্ত্রিক পূর্ব বাংলা’ কায়েমের দাবি করায় এহিয়ার সামরিক সরকার তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে ও তার অনুপস্থিতিতে সামরিক আদালতে সাত বছর সশ্রম কারাবাস ও সম্পত্তির ষাট ভাগ বাজেয়াপ্তর দন্ডাদেশ প্রদান করে। তিনি তখন আত্মগোপন করে স্বাধীনতার লক্ষ্যে কৃষকদের সংগঠন গড়ে তোলার কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেন।

 

মুক্তিযুদ্ধ

’৭১-এর মার্চে অসহযোগ আন্দোলন শুরু হলে তিনি কার্যত প্রকাশ্যে স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র প্রতিরোধ সংগঠিত করার কাজ শুরু করেন পঁচিশে মার্চ পল্টনের শেষ জনসভায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও পাকিস্তানি সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহবান জানান।

 

পঁচিশে মার্চের কালরাতের গণহত্যার পর তিনি আর এক মুহূর্ত দেরী না করে ঢাকার অদূরে নরসিংদীর শিবপুরকে কেন্দ্র করে মুক্তিযুদ্ধ সংগঠনের কাজ শুরু করেন এবং পরে ভারতে গিয়ে সকল বামপন্থী সংগঠনকে নিয়ে ‘জাতীয় মুক্তিযুদ্ধ সমন্বয় কমিটি’ গঠন করে বঙ্গবন্ধুকে রাষ্ট্রপতি করে প্রবাসী সরকারের প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন করেন ও মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন সেক্টরে এবং দেশের অভ্যন্তরে কেন্দ্র স্থাপন করে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।

 

স্বাধীনতা উত্তর রাজনীতি

স্বাধীনতা উত্তরকালে রাশেদ খান মেনন বিভক্ত কমিউনিস্ট গ্রুপগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (লেনিনবাদী) গঠন করেন এবং নিজে ভাসানী ন্যাপ-এর প্রচার সম্পাদক ও কৃষক সমিতির দপ্তর সম্পাদকের দায়িত্ব নেন। ১৯৭৩-এ ন্যাপ (ভাসানী)-এর প্রার্থী হিসেবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল থেকে দু’টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন

 

১৯৭৪-এ ভাসানী ন্যাপ থেকে বেরিয়ে এসে ইউনাইটেড পিপলস পার্টি (ইউপিপি) গঠিত হলে তার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। কিন্তু ১৯৭৮-এ ইউপিপি সামরিক শাসক জেনারেল জিয়াউর রহমানের জাতীয়তাবাদী ফ্রন্টে যোগ দিলে রাশেদ খান মেনন ইউপিপি ত্যাগ করে গণতান্ত্রিক আন্দোলন গঠন করেন এবং ১৯৭৯ সনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এ সময় ওয়ার্কার্স পার্টি নামে পার্টি পুনঃসংগঠিত হয় এবং রাশেদ খান মেনন ওয়ার্কার্স পার্টির সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য হন।

 

সামরিক স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন নববইয়ের গণঅভ্যুত্থান

১৯৮২ জেনারেল এরশাদ সামরিক শাসন জারি করলে রাশেদ খান মেনন সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলনে অন্যতম মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। ঐ সামরিক শাসনবিরোধী প্রথম বিবৃতিটি- যা পরবর্তীকালে পনের দল গঠনের ভিত্তি স্থাপন করে তার রচয়িতাও ছিলেন তিনি। ’৮৩-এর মধ্য ফেব্রুয়ারির ছাত্র আন্দোলনের কারণে তাকে অন্যান্য রাজনৈতিক নেতাদের সাথে চোখ বেঁধে সামরিক ছাউনির নির্জন সেলে আটক রাখা হয়।পরে দিনাজপুর জেলে স্থানান্তর করা হয়।

 

১৫ ও ৭ দলের যুগপৎ আন্দোলন পরিচালনায় ভূমিকার জন্য সামরিক শাসনামলে বিভিন্ন সময় তাকে আত্মগোপনে যেতে হয়। এই সময়কালে সম্মিলিত কৃষক সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তুলে ভূমি সংস্কারের স্বপক্ষে কৃষক আন্দোলন গড়ে তোলা এবং শ্রমিক আন্দোলনকে একত্রিত করে প্রথমে এগার ফেডারেশনের ঐক্য ও পরবর্তীতে শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ) গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও তিনি ভূমিকা রাখেন। সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলনের এই পর্যায়ে সামরিক শাসনের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রশ্নে ওয়ার্কার্স পার্টিসহ পাঁচটি বাম দল পনের দল থেকে বেরিয়ে এসে পাঁচ দলীয় বাম জোট গঠন করে এবং সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন অব্যাহত রাখে। এই সময়কালে ওয়ার্কার্স পার্টি ও অপর কমিউনিস্ট গ্রুপ মজদুর পার্টি ঐক্যবদ্ধ হলে রাশেদ খান মেনন এই ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

 

পাঁচদল হিসেবে সামরিক স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের ঐক্য পুনঃস্থাপনে রাশেদ খান মেনন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন এবং পাঁচদল, সাত দল ও আট দলের ঐতিহাসিক তিন জোটে’র ঘোষণার ভিত্তিতে ’৯০-এর গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরশাহীর পতন হয়। ১৯৯১-এর পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাশেদ খান মেনন পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

 

সংসদ সদস্য হিসেবে রাশেদ খান মেননের ভূমিকা

সংসদীয় গণতন্ত্র প্রবর্তনের জন্য সংসদের ‘বিশেষ কমিটি’ তে সংবিধানের দ্বাদশ সংশোধনী প্রণয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। রাশেদ খান মেনন সংসদের গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক এ্যাকাউন্টস কমিটি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক স্থায়ী কমিটি ও বিভিন্ন বিশেষ কমিটির সদস্য হিসেবে কাজ করেন।

 

স্বাধীনতার শত্রু জামাত-শিবির বিরোধী আন্দোলন-সংগ্রাম

সংসদে তিনি জামাত-শিবিরের মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক তৎপরতা, বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে সশস্ত্র আক্রমণ, সন্ত্রাস ও সন্ত্রাসী তৎপরতা, বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ-এর কাছে সরকারের নতজানু নীতি, কাঠামোগত সংস্কার, বিশেষ করে পাটকলের কাঠামোগত সংস্কারের নামে পাট শিল্পের ধ্বংস সাধন, মুক্ত বাজার অর্থনীতির নামে লুটপাটের অর্থনীতিক নীতি অনুসরণের এবং দৃঢ় বিরোধীতা, কৃষক, খেতমজুর ও শ্রমজীবী মানুষের স্বপক্ষে দৃঢ় ভূমিকা গ্রহণ করেন। সংসদের বাইরে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আন্দোলন সংগঠিত করতেও তিনি বিশেষ ভূমিকা রাখেন।

 

এই সব মিলিয়ে রাশেদ খান মেনন সাম্প্রদায়িক-মৌলবাদী গোষ্ঠীর আক্রমণের টার্গেটে পরিণত হন এবং তার বিরুদ্ধে জামাত-শিবিরসহ ধর্মাশ্রয়ী দলগুলোর পক্ষ থেকে আক্রমণাত্মক প্রচারণা শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯২-এর ১৭ আগস্ট নিজ পার্টি কার্যালয়ের সামনে গুলিবিদ্ধ করে তাকে হত্যার চেষ্টা হয়। প্রথমে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল ও পরে লন্ডনে কিংস কলেজে দু’বার অস্ত্রোপচার হলে তিনি জীবনে বেঁচে যান।

 

রাশেদ খান মেনন গুলিবিদ্ধ হলে সারা দেশে যে অভূতপূর্ব স্বতঃস্ফূর্ত বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয় তার মধ্য দিয়ে তার প্রতি দেশবাসীর ভালবাসার বিশেষ প্রকাশ ঘটে। দেশবাসীর দেয়া রক্ত, দোয়া, আশীর্বাদ ও শুভেচ্ছার বরকতে তিনি সুস্থ হয়ে দেশে ফিরে আবার রাজনৈতিক কর্মকান্ডে লিপ্ত হন। এই সময় তিনি ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার’-এর বিধান সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার জাতীয় সংগ্রামেও বিশেষ ভূমিকা রাখেন।

 

জাতীয় সম্পদ রক্ষার আন্দোলন

রাশেদ খান মেনন ১৯৯৪-এর মে-তে ঐক্য কংগ্রেসে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট গঠন করেন। বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের নেতৃত্বে নির্বাচনী সংস্কারসহ ব্যবস্থা পরিবর্তনের লড়াইয়ে আত্মনিয়োগ করেন। ১৯৯৮ সালে বিকল্প গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে এগার দল গঠন করে বিভিন্ন জাতীয় ও অর্থনৈতিক, শ্রমজীবী মানুষের ইস্যুতে তিনি আন্দোলন গড়ে তোলেন। এর মধ্যে তেল-গ্যাস-বন্দর জাতীয় সম্পদ রক্ষার জন্য জাতীয় কমিটি গঠন, গ্যাস বিদেশে রপ্তানি ও চট্টগ্রাম বন্দরকে বিদেশীদের হাতে তুলে দেয়ার বিরুদ্ধে ঐ জাতীয় কমিটির উদ্যোগে দেশব্যাপী লং মার্চ সংগঠিত করে গ্যাস রপ্তানি প্রতিরোধ করেন।

 

বিএনপি জামাতি জোট সরকারবিরোধী আন্দোলন

২০০১ সালে বিএনপি-জামাত চারদলীয় জোট সরকার গঠন করে দেশব্যাপী সাম্প্রদায়িক তান্ডব শুরু করলে তিনি তার বিরুদ্ধে অন্যান্যদের নিয়ে প্রতিরোধ সংগঠিত করেন। জোট সরকারের প্রশ্রয়ে যে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটে তার বিরুদ্ধেও প্রথম প্রতিরোধ গড়ে তোলে ওয়ার্কার্স পার্টি। বিএনপি-জামাত জোটের দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িক নীতির বিরুদ্ধে প্রথমে এগার দল ও পরে আওয়ামী লীগ, জাসদ, ন্যাপসহ চৌদ্দ দলের আন্দোলন গড়ে তোলেন। চৌদ্দ দলের ৩১ দফা নির্বাচনী সংস্কার ও ২৩ দফা ন্যূনতম কর্মসূচি প্রণয়নে তিনি মুখ্য ভূমিকা রাখেন। ২০০৫ সালের ১৫ জুলাই জননেত্রী শেখ হাসিনা ঐ নির্বাচনী সংস্কারের রূপরেখা তুলে ধরলে তা জাতীয় দাবিতে পরিণত হয়। ২০০৮ সালের ডিসেম্বর নির্বাচনে তিনি ১৪ দলের প্রার্থী হিসেবে ঢাকা-৮ নির্বাচনী এলাকা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এই সংসদের তিনি কার্যউপদেষ্টা কমিটির সদস্য ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন। এ ছাড়া সংবিধান সংশোধন সম্পর্কিত বিশেষ কমিটিরও তিনি সদস্য ছিলেন।

 

ওয়ান ইলেভেন পরবর্তী জাতীয় রাজনীতিতে ইতিবাচক দৃঢ় ভূমিকা

এগারই জানুয়ারির পর দেশে জরুরি অবস্থা জারি হলে তার মধ্যেও তিনি সেনানিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বস্তি, রিক্সা, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নামে হাট-বাজার উচ্ছেদ, দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি, পাটকল বন্ধ করা, ব্যাংক-বীমাসহ রাষ্ট্রায়ত্ত্ব প্রতিষ্ঠানকে বিশ্বব্যাংকের নির্দেশ অনুযায়ী কোম্পানিতে রূপান্তরিত করে বি-রাষ্ট্রীয়করণের নীতি কার্যকর করা, নারী নীতি স্থগিত করা, চট্টগ্রাম বন্দরকে ব্যক্তি ও বিদেশী ব্যবস্থাপনায় তুলে দেয়া, ফুলবাড়িয়া কয়লা খনিকে এশিয়া এনার্জীর হাতে তুলে দেয়ার ষড়যন্ত্র, ইরাক-আফগানিস্তান ও প্যালেস্টাইনসহ বিশ্বব্যাপী সাম্রাজ্যবাদবিরোধী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তিনি দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করেন। সেনা নিয়ন্ত্রিত এই সরকারের দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের রাজনৈতিক চরিত্র, তথাকথিত ‘মাইনাস টু থিয়োরী’ তথাকথিত সংস্কার প্রস্তাব ও বিশেষ পৃষ্ঠপোষকতায় রাজনৈতিক দলসমূহে ভাঙন সৃষ্টি, ‘কিংস পার্টি’ গঠন এবং সর্বোপরি একটি নিয়ন্ত্রিত রাজনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর। কারারুদ্ধ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গৃহীত ব্যবস্থা ও তার মুক্তির দাবিতে তিনিই প্রথম সোচ্চার হন। নির্বাচনী সংস্কারসহ নির্বাচন কমিশন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাথে সংলাপে গণতন্ত্র ও নির্বাচিত ব্যবস্থায় উত্তরণের ক্ষেত্রে তিনি দৃঢ় ভূমিকা রাখেন। সংসদ সদস্য হিসেবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, শত্রু সম্পত্তি আইন বাতিল করা, শ্রমিক স্বার্থবিরোধী শ্রম অধ্যাদেশ, গার্মেন্টস শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন ও মজুরির নিশ্চয়তা, জাতীয় শিল্প রক্ষা, তেল-গ্যাস সম্পদ বিশেষ করে শিল্প সম্পদ রপ্তানি নিষিদ্ধকরণ, নারী নীতি বাস্তবায়ন, পরিবেশ রক্ষা প্রতিবন্ধীদের অধিকার, শিশু অধিকারসহ তিনি বিভিন্ন ইস্যুতে সব সময়ই সোচ্চার থেকেছেন।

 

২০০৮ সালের নির্বাচনে তিনি ঢাকা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। নবম সংসদে তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও কার্যউপদেষ্টা কমিটির সদস্য ছিলেন। এছাড়া সংবিধান সংশোধন বিশেষ কমিটির সদস্য হিসাবে সংবিধানে পঞ্চদশ সংশোধনী প্রণয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। আদিবাসী সংসদীয় ককাসের তিনি সভাপতি ছিলেন। ২০১৪ এর ৫ ই জানুয়ারী নির্বাচনের জন্য গঠিত সর্বদলীয় মন্ত্রী সভার তিনি সদস্য ছিলেন। এবং ডাক ও তার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। ঐ নির্বাচনে তিনি ঢাকা থেকে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। বর্তমানে তিনি সমাজকল্যান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী। 

 

রাজনৈতিক কর্মকান্ড ছাড়াও গবেষণার কাজ, প্রবন্ধ-নিবন্ধ রচনা, বিশেষ করে জাতীয় দৈনিকসমূহে তার নিয়মিত কলাম লেখায় তিনি নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। তার ঐ কলামসমূহ একত্রিত করে এ পর্যন্ত পাঁচটি বই প্রকাশিত হয়েছে।

 

ব্যক্তি জীবনে রাশেদ খান মেনন ১৯৬৯-এর মে মাসে তার ছাত্র আন্দোলনের সহকর্মী লুৎফুন্নেছা খান বিউটিকে বিয়ে করেন। লুৎফুন্নেছা খান বিউটি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর পপুলেশন রিসার্চ এন্ড ট্রেনিং এর সিনিয়র ইন্সট্রাক্টর হিসেবে অবসর নিয়েছেন।

 

রাশেদ খান মেনন রাজনৈতিক বিভিন্ন সভা, সম্মেলন ও সেমিনার উপলক্ষ্যে ভারত, নেপাল, গণচীন,  কিউবা, উত্তর কোরিয়া, জাপান, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, আলজেরিয়া, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইউরোপের জার্মানী, বেলজিয়াম, হল্যান্ড, লুক্সেমবার্গ, ফ্রান্স, বুলগেরিয়া ও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ভ্রমণ করেন।

 

রাশেদ খান মেনন ৬০-এর দশকের সামরিক শাসনবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, শিক্ষা আন্দোলন, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, মুক্তিযুদ্ধ. ৯০-এর গণঅভ্যুত্থানসহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী ভূমিকা রাখার জন্য ঢাকা সিটি করপোরেশন ৮ অক্টোবর ২০০৮ সনের রাজধানীর মগবাজার চৌরাস্তা হতে বাংলামটর রোড পর্যন্ত এই সড়কের নাম রেখেছে ‘‘রাশেদ খান মেনন সড়ক’’।


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon